পবিত্র কোরআনের পরতে পরতে মহান আল্লাহ তায়ালা বিশ্ববাসীকে নানাভাবে এ কথাই বলেছেন যে, বিশ্বাসী ও সৎকর্মীলদের জন্যেই রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতের চুড়ান্ত কল্যাণ। এখন আমরা সরাসরি কোরআন এর বিভিন্ন আয়াতে স্রষ্টার এ বিষয়ে কথাগুলো দেখবো ও গভীরভাবে চিন্তা
করবো।
সূরা বাকারা-আয়াত-২৫ এ মহান স্রষ্টা বলেন, “আর হে নবী! যারা বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীল তাদের সুসংবাদ দাও জান্নাতের, যার পাদদেশে থাকবে প্রবহমান ঝর্নাধারা। সেখানে যখন তাদের ফলফলাদি খেতে দেয়া হবে, তখন তারা আনন্দে বলবে, ’হাঁ, দুনিয়ায় আমরা এ ধরনের ফলই খেতাম।’ সেখানে তাদের সাথে থাকবে পবিত্র সাথিরা এবং সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।
সূরা বাকারা-আয়াত-৮২, আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা বলেন, “আর যারা বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীল তারাই জান্নাতে বাস করবে – সেখানে থাকবে চিরকাল।
সূরা আলে ইমরান, ৫৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা বলেন, আর যারা বিশ্বাসী ও সৎর্কমশীল, আল্লাহ তাদের যথাযথ পুরস্কার প্রদান করবেন। আল্লাহ জালেমদের অপছন্দ করেন।
সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৩৯ এ আল্লাহ তায়ালা বলেন “আর কখনো হতাশ হয়োনা, দুঃখ করোনা, সত্যিকার বিশ্বাসী হলে তোমাদের উত্থান
সুনিশ্চিত।”
সূরা আলে ইমরান এর ১৭৯ নম্বর আয়াতের শেষের দিকে আল্লাহতায়ালা বলেন, “—-তোমরা বিশ্বাসী হলে আর আল্লাহ-সচেতনভাবে চললে
তোমাদের জন্যে অপেক্ষা করছে মহাকল্যাণ।
সূরা নিসা’র ১২৪ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, “পুরুষ হোক বা নারী, বিশ্বাসী হয়ে যে-ই সৎকর্ম করবে, সে-ই জান্নাতে দাখিল হবে। তাদের প্রতি পরমাণু পরিমাণও অবিচার করা হবে না।”
সূরা মায়েদা’র ৬৫ নম্বর আয়াতে মহান স্রষ্টা বলেন, “অবশ্য কিতাবিরা যদি অবাধ্যতা ত্যাগ করে বিশ্বাসী হয়ে আল্লাহর আনুগত্যের পথ অনুসরণ করত, তবে অবশ্যই আমি ওদের অতীতের পাপমোচন করতাম এবং চিরসুখময় জান্নাতে দাখিল করতাম।”
সূরা আরাফ এর ৪২-৪৩ আয়াতে মহান স্রষ্টা বলেন, “বিশ্বাসী ও সৎর্কমশীল কারো ওপর আমি তার সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্বের বোঝা চাপিয়ে দেই
না। তারা জান্নাতে প্রবশে করবে এবং সেখানেই তারা বাস করবে চিরকাল। ৪৩. তাদের অন্তরে যদি কোনো নেতিবাচক চিন্তা বা অনুভূতি অবশিষ্ট থাকে তা-ও আমি দূর করে দেবো। প্রবাহিত র্ঝনার পাশে বসে তারা বলবে ‘শোকর আলহামদুলিল্লাহ! সকল প্রশংসা আল্লাহর! যিনি আমাদের এ পথ দেখিয়েছেন। আল্লাহ পথ না দেখালে আমরা কখনো এ সত্যপথ পেতাম না। আল্লাহর
প্রেরিত রসুলরা তো সত্যবাণী নিয়ে এসেছিলেন’ তখন তাদের বলা হবে ‘তোমাদরে পার্থিব জীবনের র্কমফল হিসেবেই তোমরা এ জান্নাতের উত্তরাধিকারী হয়েছো।’
সূরা আরাফ এর ৮৫ নম্বর আয়াতের শেষাংশে স্রষ্টা বলেন, “—-সত্যিকার বিশ্বাসী হলে এর মধেই তোমাদের কল্যাণ রয়েছে।”
সূরা তওবা’র ৭২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আল্লাহ বিশ্বাসী নরনারীকে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার পাদদেশে থাকবে
প্রবহমান র্ঝনাধারা। তারা থাকবে চিরস্থায়ী শান্তি ও আনন্দের বাগানে। অবশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টিই হবে তাদের জন্যে সর্বোচ্চ প্রাপ্তি, সর্বোত্তম তৃপ্তি। আর এটাই মহাসাফল্য।”
সূরা ইউনুস এর ৪ নম্বর আয়াতের মাঝামাঝি মহান স্রষ্টা বলেন, তিনি আবার তাকে সৃজন করবেন, যাতে করে বিশ্বাসী ও সৎর্কমশীলদের যথাযোগ্য
পুরস্কার দিতে পারেন।
সূরা ইউনুস এর ৯-১০ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “অবশ্যই যারা বিশ্বাসী ও সৎর্কমশীল তাদের বিশ্বাসের জন্যে প্রতিপালক তাদেরকে পথনির্দেশ
করবেন অনন্ত সুখময় জান্নাতে যার পাদদেশে থাকবে প্রবহমান র্ঝনাধারা। সেখানে পরম তৃপ্তিতে তারা বলে উঠবে ‘হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র মহান!’ পারস্পরিক অভিবাদন হবে ‘শান্তি! শান্তি! তাদের শেষ বাক্য হবে ‘সকল প্রশংসা শুধু বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহরই!’
একই সূরার (সূরা ইউনুস) ৬২-৬৩ আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, “জেনে রাখো! আল্লাহর নৈকট্যলাভকারীদের কোনো ভয় নেই। আর তারা দুঃখতিও হবে না। যারা বিশ্বাসী ও আল্লাহ-সচেতন, তাদের জন্যে দুনিয়া ও আখেরাতে শুধু সুসংবাদই সুসংবাদ।
সূরা হুদ এর ২৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “শুনে রাখো, যারা বিশ্বাসী, সৎর্কমশীল এবং একান্তভাবে প্রতিপালকের অনুগত, তারাই জান্নাতে
বাস করবে। সেখানে থাকবে তারা চিরকাল।
সূরা ইউসুফ এর ৫৭ নম্বর আয়াতের শেষাংশে মহান আল্লাহ বলেন, আর যারা বিশ্বাসী ও আল্লাহ-সচেতন তাদের জন্যে আখেরাতের পুরস্কারই উত্তম।
সূরা ইব্রাহিম এর ২৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, বিশ্বাসী ও সৎর্কমশীলরা প্রবেশ করবে জান্নাতে যার পাদদেশে থাকবে প্রবহমান র্ঝনাধারা। সেখানে থাকবে তারা চিরকাল। সেখানে তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে অভিবাদন হবে ’শান্তি’।
সূরা ইব্রাহিম এর ২৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা আল্লাহর কালামে বিশ্বাসী, আল্লাহ তাদের দুনিয়া ও আখেরাতে উভয় স্থানেই
সুপ্রতিষ্ঠিত ও সম্মানিত করবেন। —-
একইভাবে সূরা আন-নহল এর ৯৭ নম্বর আয়াতে মহান স্রষ্টা বলেন,বিশ্বাসী পুরুষ হোক বা নারী, যেই সৎর্কম করবে তাকে দুনিয়ায় র্সাথক জীবন
দান করব এবং পরকালে সে তার কাজের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পাবে।
সূরা তাহা এর ৭৫-৭৬ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর যারা বিশ্বাসী ও সৎর্কমশীল হিসেবে হাজির হবে তাদের জন্যে রয়েছে উঁচু র্মযাদা, স্থায়ী
জান্নাত, যার পাদদেশে থাকবে প্রবহমান র্ঝনাধারা। জান্নাতে থাকবে তারা চিরকাল। এ পুরস্কার তাদেরই জন্যে যারা নিজেদের পরিশুদ্ধ করেছে।
সূরা আম্বিয়া এর ১০১ থেকে ১০৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা বলেন (বিশ্বাসী ও সৎর্কমশীলদের জন্যে আমি আগে থেকেই কল্যাণ নির্ধারিত করে রেখেছি। তাদের জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হবে। তারা এ র্আতনাদের ক্ষীণতম শব্দও শুনবে না। তারা সেখানে তাদের মনপসন্দ সবকিছু চিরকাল উপভোগ করবে। মহাবিচারের সমাবেশে ময়দানের বিভীষিকায় বিশ্বাসীরা কখনো বিচলিত হবে না। ফেরেশতারা তাদের স্বাগত জানিয়ে বলবে ‘আজ তোমাদের সেই শুভদিন, যার প্রতিশ্রুতি তোমাদের দেয়া হয়েছিল।’
সূরা রুম এর ১৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীলরা জান্নাতে আনন্দে থাকবে।
এই সূরারই (সূরা রুম) ৪৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আসলে যারা বিশ্বাসী হয়ে সৎর্কম করে পরিণামে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করেন। আল্লাহ সত্য অস্বীকারকারীদের অপছন্দ করেন।
সূরা লোকমান এর ৮-৯ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর যারা বিশ্বাসী ও সৎর্কমশীল তাদের জন্যে রয়েছে নেয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাত। আল্লাহর
প্রতিশ্রুতি অনুসারে সেখানে তারা চিরকাল থাকবে আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
সূরা সেজদা’র ১৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, এই বিশ্বাসীদের সৎকর্মের জন্যে (পরকালে) কী চোখ জুড়ানো পুরস্কার গোপনে রাখা আছে কোনো মানুষের পক্ষেই সম্ভব নয় তা কল্পনা করা!
সূরা সাবা এর ৪ নম্বর আয়াতে মহান রাব্বুল আলআমীন বলেন, (মহাবিচার অবশ্যম্ভাবী) কারণ হচ্ছে বিশ্বাসী ও সৎর্কমশীলদের তিনি পুরস্কৃত করবেন। এদের জন্যেই অপেক্ষা করছে ক্ষমা ও উত্তম র্বণাঢ্য জীবনোপকরণ।
সূরা জুমার এর ১০ নম্বর আয়াতের প্রথমাংশে মহান স্রষ্টা বলেন, হে আমার বিশ্বাসী বান্দারা! তোমরা আল্লাহ-সচতেন হও! যারা পার্থিব জীবনে সৎর্কম করে চূড়ান্ত কল্যাণ অপক্ষো করছে তাদের জন্যে।—-
Shukor Alhamdulillah. Thanks a lot.